আর নয় বিলম্বের লয়… | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট | শামস্ বিশ্বাস

আর নয় বিলম্বের লয়… | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট | শামস্ বিশ্বাস : অনেক সময়ই আলসেমি করে আমরা ঠিক সময়ে ঠিক কাজটা করে উঠতে পারি না। এর জন্য একদিকে যেমন দিতে হয় খেসারত অন্য দিকে থেকে যায় আপসোস। ‘টাইম ইজ মানি’ তাই কাজের জগতে ‘লেট এন্ড লেজি’দের অবস্থান হাতে লসের খাতায়। যে কোনও কাজে আত্মতৃপ্তি বা সেলফ স্যাটিসফেকশন একটা বড় ব্যাপার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেলফ মোটিভেটেড হয়েও অনেক সময়ই জীবনের কাজের ছন্দকে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিলম্বিত করে ফেলি। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করারও আলাদা মূল্য আছে। তাই শুধু ভালো কাজ নয়, সময়মতো ভালো কাজ করা প্রয়োজন।

আর নয় বিলম্বের লয়... | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট | শামস্ বিশ্বাস

আর নয় বিলম্বের লয়…

যেন এক বিলম্বিত লয়

যে কোনও কাজে আত্মতৃপ্তি বা সেলফ স্যাটিসফেকশন আমাদের অনেকের কাছেই একটা বড় ব্যাপার। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেলফ মোটিভেটেড হয়েও অনেক সময়ই জীবনের কাজের ছন্দকে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিলম্বিত করে ফেলি। নিউ ইয়ার রেজেলিউশন নিই, ভাবি এই বছর আর আলসেমি করে ‘টাইম ওয়েস্ট’ করবো না, কিন্তু কে শোনে কার কথা। সেই আবার আজ করি কাল করি করে করে প্রায় একই অবস্থা। এই বিলম্বিত লয়ের হাত থেকে যে কীভাবে বেরবো, ভাবতে ভাবতেই তো বছরগুলো কেটে যাচ্ছে।

Girl in Office 2 আর নয় বিলম্বের লয়... | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট | শামস্ বিশ্বাস

আমরা কি ইন্টারনাল টাইম ওয়েস্টার?

ভালো করে চিন্তা করে দেখলে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাই। অ্যাসাইনমেন্টটা কিন্তু আমার হাতে ঠিক সময়েই এসেছিল, একটা ডেডলাইনও পেয়েছিলাম, কেউ কোনো বাধাবিঘ্নও ঘটেনি, কিন্তু তবু আমি সময় মতো সিদ্ধান্তটা নিতে পারিনি। ফলে আবার ডেডলাইন ওভার আর আমি একরাশ হতাশা নিয়ে আবার ফেলিওর-এর মুখোমুখি। এই তো চলছে, কিন্তু তবু আমার মন একথা মানতে নারাজ। সে আমাকে দিয়ে ভাবাবেই যে দোষটা অন্য কারোরই। শুরু হয়ে যায় ‘স্কেপ গোটিং’ বা একে অন্য কে দোষারোপ করা। এই ধরনের তর্ক বিতর্ক থেকে শেষমেশ আসলে সেই নেগেটিভিটিই উঠে আসে আর তাতে পুনরায় স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশন ছাড়া আর নতুন কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় না।

Office Girl 3 আর নয় বিলম্বের লয়... | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট | শামস্ বিশ্বাস

দেরির কারণ

  • হাতে পাওয়া অ্যাসাইনমেন্টটা পছন্দের নয়।
  • একার পক্ষে পুরো অ্যাসাইনমেন্টটা শেষ করে ওঠা সম্ভব নয়।
  • সিনিয়র বা সাবঅর্ডিনেটদের থেকে অসহযোগিতা।
  • মাত্রাতিরিক্ত ‘পারফেকশনিস্ট’।
  • নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট কনফিডেন্ট ছিল। তাই একটু ইমপালসিভ হয়েই দায়িত্বটা নিয়ে পস্তানো।
  • যে কোনও নতুন বা অজানা অচেনা কাজে হাত দেয়ার পরে প্রাথমিক ভয়।
  • অতিরিক্ত ‘শো অফ’ – যে আমি অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করি।

ব্যক্তি বিশেষে ‘দেরি’র কারণ বিভিন্ন রকম হতে পারা। সমস্য হাজারটা থাকতে পরে। কিন্তু অজুহাত বিভিন্ন হলেও নিট রেজাল্ট কিন্তু সেই একই আর তা হল ‘বিলম্বিত লয়…’

 

Office Desk 2 আর নয় বিলম্বের লয়... | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট | শামস্ বিশ্বাস

 

ভাঙবেন যেভাবে বিলম্বের বলয়:

  • প্রথমত সব থেকে জরুরি হল অন্যকে দোষারোপ না করে নিজেকে প্রশ্ন করা। যাকে আমরা বলি অন্তরর্দর্শন। খুঁজে বার করা, যে কেন আলসেমি জনিত বিলম্ব হয়। নিজের ভুল স্বীকার করাটাও একটা মহৎ গুণের মধ্যেই পড়ে। আর এটি অভ্যাস করে নিজেকে শোধরানোর সুযোগ দিতে পারলে নিজেরই সেলফ এস্টিম বাড়বে।
  • সালামি বা স্লিসিং টেকনিক ব্যবহার করেও ‘লেট লতিফ’ থেকে ‘কাজের কাজী’ হতে পারবেন। এর জন্য যা করতে হবে তা হল, যে কোনও অ্যাসাইনমেন্টকে ছোট ছোট পর্ব বা এপিসোডে ভাগ করে নিয়ে প্রত্যেকটি ভাগের জন্য একটি নির্দিষ্ট টাইম অ্যালট করা। এতে রিভিউয়ের সময় যেমন পাওয়া যায়, তেমন অনেক কারেকশনেরও সময় পাওয়া যায়।
  • ব্যালেন্সিং এসপেক্ট টেকনিকের জন্য অ্যাসাইনমেন্টের কাজ শুরু করার আগে তার একটি সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করা যাতে বোঝা যায় যে, যে কাজটিতে হাত দিয়ে চলেছি তার নানা ‘পজিটিভ অ্যান্ড নেগেটিভ অ্যাসপেক্ট’ গুলো কী কী হতে পারে। সেই লিস্ট অনুযায়ী এগোলে কাজে তো গতি আসে; সাথে সাথে ভুলভ্রান্তি কম হয় এবং ‘সাকসেস রেট’ও বাড়ে।
  • কে কী ভাবে না ভেবে নিজেকেই নিজে রিওয়ার্ড দেওয়ার সিস্টেম চালু করা। এক্ষেত্রে মোটিভেশন ধরে রাখার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে নির্বাচন করা যে রিওয়ার্ড ‘এপিসোডিক ’ হবে না ‘এন্ড বেসড’ হবে। আর ইনসেনটিভ বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও যার যা ভালো লাগে তাই সিলেক্ট করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে একটি চকলেট খাওয়া থেকে শুরু করে আরও একটি নতুন একটি অ্যাসাইনমেন্টের রেসপনসিপিবিটি ঘাড়ে নেওয়াও হতে পারে। অর্থাৎ, যে যা চায় জীবনে। এই টেকনিককে বলে ইনসেনটিভ টেকনিক।
  • গ্রুপ টেকনিক ব্যবহার করেও অনাকাঙ্খিত দেরি কমানো যায়। এ জন্য বিশেষভাবে পারদর্শী বা সমমনস্ক মানুষদের মধ্যে কাজটা ভাগ করে নিতে হয়। কাজের ফলাফলের গুণগত তারতম্যের সাথে একটা অ্যাডজাস্টমেন্টের প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে তাই সঠিক দক্ষ রিসোর্স খুঁজে বের করাটাও একটা এমার্জেন্সি ডিসিশন মেকিং হয়ে ধরে।

 

আরও পড়ুন:

Leave a Comment