আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় আগুন আবিষ্কারের কাহিনী
আগুন আবিষ্কারের কাহিনী
আগুন আবিষ্কারের কাহিনী
আধুনিক সভ্যতায় আগুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সভ্যতার শুরুতেই মানুষ আবিষ্কার করেছিল আগুন। বলা হয়ে থাকে যে কয়েকটি আবিষ্কার মানুষকে সভ্য মানুষ হিসেবে পরিচিত করেছে তার মধ্যে আগুন অন্যতম। মানব সভ্যতার শুরুর দিকে যখন মানুষ গুহায় কিংবা গাছের ডালে বাস করত তখন আগুন ছিল তাদের কাছে খুব ভয়ের বিষয়বস্তু। তারা আগুনকে ভাবত দেবতার রোষের বহিঃপ্রকাশ। তাই বনে আগুন লাগলে তারা দেবতাকে খুশি করার জন্য নানাকিছু করত।
এভাবে শত শত বছর চলে যাওয়ার পর তারা আবিষ্কার করেছে প্রকৃতিতে কীভাবে আগুন সৃষ্টি হয়। কীভাবে শুকনো ডালে ডালে ঘষা লেগে সৃষ্টি হওয়া স্ফুলিঙ্গ তৈরি করে বিশাল আগুন। আবার পাথরে পাথরে ঘষা লেগে কীভাবে আগুন সৃষ্টি হয় সেটাও মানুষ আবিষ্কার করেছিল। কিন্তু শুধু আগুন সৃষ্টি করলেই তো হবে না, আগুনের উপর নিয়ন্ত্রণও থাকতে হবে। আগুনের ব্যবহার আয়ত্ত করতে, আগুনকে নিজের প্রয়োজনে কাজে লাগাতে মানুষের অনেক বছর সময় লেগেছে।
প্রাকৃতিক ঘটনা দেখে শেখা, আগুন ধরানোর কৌশল আয়ত্ত করা ইত্যাদি মেধাশ্রম ও কায়িকশ্রমের সমন্বিত উদাহরণ। আগুনের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে আগুনকে নিজের কাজে লাগানোর দক্ষতা মানুষ অর্জন করেছে মেধাশ্রম ও কায়িকশ্রম একসাথে প্রয়োগ ও অনুশীলনের মাধ্যমে।
আচ্ছা, ভেবে দেখ তো, আগুন ধরাতে না হয় মানুষ শিখল, কিন্তু আগুনকে নিজের কাজে কীভাবে লাগানো যায়, কোন কোন কাজে লাগানো যায় তা মানুষ শিখল কীভাবে ?

কোনো একদিন হয়তো কিছু ক্ষুধার্ত মানুষ খাবারের খোঁজ করে বেড়াচ্ছিল। খুঁজতে খুঁজতে হয়তো দাবানলের আগুনে পুড়ে যাওয়া কোনো প্রাণীর মাংস তারা খেয়ে বেশ মজা পেয়েছিল। সবাই দেখল যে কাঁচা মাংসের চেয়ে পোড়া মাংসের স্বাদ ভালো। তখন তারা মাংস আগুনে পুড়িয়ে খেতে শুরু করে। এভাবে প্রচলন হয় রান্নার। অর্থাৎ মানুষ আগুনের ব্যবহার শিখেছিল প্রাকৃতিক ঘটনা দেখে। আমরা এখনও প্রাকৃতিক ঘটনা দেখে অনেক কিছু শিখি ৷
আগের দিনে তো দিয়াশলাই ছিল না, ছিল না গ্যাস লাইটারও। মানুষকে পাথর ঘষে ঘষে আগুন জ্বালাতে হতো। এভাবে আগুন জ্বালানো ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। তাই বেশিরভাগ মানবগোষ্ঠী সবসময় আগুন জ্বালিয়ে রাখত। কীভাবে দীর্ঘ সময় আগুন জ্বালিয়ে রাখা যাবে তা মানুষ শিখেছিল মেধাশ্রমের মাধ্যমে। মেধাশ্রম মানুষকে শিখিয়েছিল তার জীবনের প্রয়োজন মেটানোর উপযোগী বস্তু ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে
প্রাচীন মানুষের কোনো আনুষ্ঠানিক বিদ্যালয় ছিল না, প্রকৃতির কোলে বসে প্রকৃতি থেকে তারা শিখত। প্রকৃতির নানা ঘটনা দেখে তারা সেটা নিয়ে ভাবত, , চিন্তা করত ও মাথা খাটাত। এভাবে মাথা খাটানো মেধাশ্রমের উদাহরণ। অর্থাৎ মেধাশ্রমের মাধ্যমে তারা অনেক কিছু শিখত। যেমন- প্রাচীন মানুষরা খেয়াল করেছিল বাতাস না থাকলে আগুন জ্বলে না। আবার বেশি বাতাসে আগুন নিভে যায়।
কাজেই আগুন জ্বালানোর জন্য বাতাস নিয়ন্ত্রণ করাটা জরুরি। আবার ভেজা কোনো কিছুতে আগুন লাগে না। সেটাও মানুষ শিখেছে মেধাশ্রমের মাধ্যমে।
আরও দেখুন :