করাতি বাংলাদেশের পেশাজীবী

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় করাতি বাংলাদেশের পেশাজীবী।যা বাংলাদেশের পেশাজীবী বই এর অন্তর্ভুক্ত।

করাতি বাংলাদেশের পেশাজীবী

বাংলাদেশে বড় বড় গাছ জন্মে। আম, জাম, কাঁঠাল, দেবদারু, কড়াই ইত্যাদি গাছ। সুন্দর বনের সুন্দরী, গড়ান, গেওয়া। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন জাতের বড় বড় গাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও পাওয়া যায় শাল, সেগুন, মেহগনি ইত্যাদি। টাঙ্গাইলের মধুপুরের গড়ে প্রচুর কাঠের গাছ পাওয়া যায়। এ সমস্ত গাছ কেটে করাতিরা কাঠের তক্তা, ঘরের আসবাবপত্রের উপযোগী সাইজের কাঠ, ঘর তৈরির কাঠ বের করে থাকে।

 

করাতি বাংলাদেশের পেশাজীবী

 

প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় করাতি সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব ছিল। টিনের ঘর তৈরিতে, ঘরের আসবাবপত্র বানাতে কাঠের প্রয়োজন। নৌকা, গরুর গাড়ী ইত্যাদি তৈরি করতে কাঠ লাগে। আমরা কাঠ পেয়ে থাকি গাছ থেকে। দণ্ডায়মান গাছ কেটে তা’ চিরে বের করতে হয় কাঠ।

যাঁরা এই আস্ত গাছ কেটে তা’ থেকে প্রয়োজনমত বা মাপ অনুযায়ী কাঠ চিরে দেয় তারাই করাতি। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় নৌকা এবং গরুর গাড়ীর প্রচলন ছিল। করাতির চেরা কাঠ দিয়েই এগুলো তৈরি হতো।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বাংলায় টিনের প্রচলনের পর কাঠের ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে থাকে। টিনের প্রচলনের ফলে গ্রামের বিত্তবানেরা টিনের ঘর তৈরি শুরু করে। টিনের ঘর তৈরিতে কাঠের ব্যবহার বাড়তে থাকে। প্রাচীন বাংলায় দালান-কোঠা নির্মাণে বড় বড় কাঠের কড়ে, বর্গা ব্যবহার করা হতো। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাই করাতির কাজ করতো। বর্তমানে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরাও করাতি কাজের সাথে জড়িত।

করাতি গাছ কাটতে কুড়াল, দড়া, বাশাইল, হাতুড়ি, বাটাল, সেনি, রেদা, বাঁশ, খিল ইত্যাদি ব্যবহার করে। বাংলাদেশের যশোর, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম প্রভৃতি অঞ্চলে বেশির ভাগ করাতির বাস। করাতিরা বড় বড় গাছ কৌশলে ঝটপট কেটে ফেলে। কাজের খোঁজে করাতিরা দূর-দূরান্তে চলে যায়।

 

করাতি বাংলাদেশের পেশাজীবী

 

করাতিরা চুক্তিভিত্তিক কাজ করে আবার দৈনিক মজুরিভিত্তিতেও কাজ করে। বর্তমান করাত কল প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় করাতিদের কাজ কম। এছাড়াও গ্রামাঞ্চলে দালান কোঠার প্রচলন হওয়ায় বড় বড় গাছও কাঠের কদর কমে গেছে। বাংলাদেশে বনাঞ্চলও হ্রাস পেয়েছে। ফলে করাতিদের আজ দুর্দিন।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment