ঘরামী বাংলাদেশের পেশাজীবী

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ঘরামী বাংলাদেশের পেশাজীবী।যা বাংলাদেশের পেশাজীবী বই এর অন্তর্ভুক্ত।

ঘরামী বাংলাদেশের পেশাজীবী

প্রাচীন বাংলার ছনের কুঁড়ে ঘর, বাহারী ছনের ঘর, দোচালা, চারচালা, আটচালা প্রভৃতি রকমারি ছনের ঘর সবার পরিচিত। আদিম যুগের মানুষেরা বনে-জঙ্গলে বাস করতো। পাহাড়ের গুহায়, গাছের ডালে, মাটির গর্তে তারা বাস করতো।

কৃষি যুগের সূচনা হলে মানুষ স্থায়ীভাবে এক জায়গায় বসবাস করতে শুরু করলো। তারা ঘরবাড়ি বানাতে শিখলো। দ্রাবিড় যুগ থেকেই বাংলায় খড়-কাঠ, মাটির দেয়াল ঘরের প্রচলন হয়ে আসছে। প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে ছনের ব্যবহার হয়ে আসছে। বাংলাদেশে ছনের চাষ করা হতো।

 

 

ঘরামী বাংলাদেশের পেশাজীবী

 

 

এক বিঘা ভালো জমিতে তিন মণ পরিষ্কার ছন উৎপন্ন হয়ে থাকে। প্রতিমণ ছনের সর্বোচ্চ মূল্য দু’টাকা। ‘কোম্পানী আমলে ঢাকা” গ্রন্থে এ বিবরণ পাওয়া যায়। গ্রাম বাংলায় অসংখ্য ছনের ঘর রয়েছে। শুধু ছন দিয়ে ঘর হয় না। লাগে বাঁশ, কাঠ, সুতা, পেরেক, গুণা ইত্যাদি।

ছন দিয়ে ছন-ঘরের চালের ছাউনী হয়। বাঁশ দিয়ে চালের কাঠামো হয়। যে ব্যক্তি ছন দিয়ে চাল ছেয়ে দেয়। বাঁশ, সুতলী, পেরেক, গুণা ইত্যাদি দিয়ে ছন—ঘরের কাঠামো তৈরি করে দেয় তাঁকে ঘরামী বা ছৈয়াল বলা হয়। ছন একরকম লম্বা ঘাস। দুই/তিন হাত লম্বা হয়।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বাংলাদেশের যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা অঞ্চলে ছন হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের ছন-ঘর হয়। বিভিন্ন আকৃতির ছন-ঘর হয়। ছন ঘর দোচালা, চারচালা, আট চালা হয়ে থাকে। আদি কাল থেকেই বাংলার মানুষ মাটির দেয়াল ঘেরা ছন—ঘরে বাস করে আসছে।

গ্রামের মানুষেরা মাটি, ছন, বাঁশ এসব দিয়ে খড়ের বা ছনের ঘর তৈরি করে থাকে। প্রাচীন কালে অধিকাংশ শনের ঘরে মাটির দেয়াল থাকতো। উলুছন ও খড়ের ছাউনি দিয়ে দোচালা, চারচালা, আটচালা ঘর তৈরি করতো ঘরামী। ঘর কারুকার্য খচিত করা, ঘরের বেড়া বাঁশের অলঙ্করণ করতো ঘরামীরা।

 

ঘরামী বাংলাদেশের পেশাজীবী

 

আইন-ই-আকবরীতে আবুল ফজল উল্লেখ করেছেন বাঙালিদের ঘর প্রধানত ছন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি হয়। কিছু ঘর তৈরি করতে পাঁচ হাজার টাকার মত খরচ পড়ে। পূর্ববঙ্গ গীতিকায় এ ধরনের ঘরের বর্ণনা পাওয়া যায়। মসৃণ করে চাঁছা বাঁশের রুয়া, চটা, ছাটনা প্রভৃতি দিয়ে ঘরের ছাউনি করা হতো। বর্তমান টিনের ঘর, দালান-কোঠা ইত্যাদি প্রচলন হওয়ায় ঘরামীদের কদর ক্রমেই কমছে।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment