পোশাক শিল্প, নৌযান ও নৌপরিবহন শিল্প এবং অটোমোবাইল শিল্প আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “বাউবি এসএসসি ২৩৫৮ ক্যারিয়ার শিক্ষা” এর “কর্মক্ষেত্র নির্বাচন এবং ক্যারিয়ার উন্নয়ন” ইউনিট ৪ এর অন্তর্ভুক্ত।
পোশাক শিল্প, নৌযান ও নৌপরিবহন শিল্প এবং অটোমোবাইল শিল্প
দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে যে সকল শিল্প সেগুলোর মধ্যে পোষাক শিল্প অন্যতম। আমাদের দেশে বিপুল সংখ্যক লোক এ শিল্পে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। অতএব আপনাদের মধ্যে যারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী নন কিন্তু বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে অনুরক্ত, তারা বৃত্তিমূলক শিক্ষা অর্জন করে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জায়গা তৈরি করতে পারেন।
পোশাক শিল্প: বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ পোশাক শিল্প। এর সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দেশের পোশাক শিল্পের উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করছে। দেশের বহু জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।
উচ্চ শিক্ষিত এবং স্বল্প শিক্ষিত অনেক লোক পোশাক শিল্পের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছে। দিন দিন এ শিল্পের প্রসারও ঘটছে। এ পেশায় আসতে হলে ট্রেড অনুযায়ী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দক্ষ কর্মী হিসেবে যোগদান করলে স্বচ্ছলভাবে চলতে তেমন একটা অসুবিধা হয়না। কর্মী ছাড়াও মার্চেন্ডাইজার, ম্যানেজার, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, ফ্যাশন ডিজাইনার, প্রোডাকশন ম্যানেজারসহ আছে আরো অনেক পদ। টেকনিক্যাল কাজের বেশ সুযোগ রয়েছে যেমন- মেশিন অপারেটর।
নৌযান ও নৌপরিবহণ শিল্প: জাহাজ শিল্প বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। ইতোমধ্যে এ শিল্প দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। দিন দিন এ শিল্পের কদর বাড়ছে। আন্তর্জাতিক জাহাজ নির্মাণের দ্বারও উন্মোচিত হয়েছে। প্রয়োজন দক্ষ জনবলের। প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠি শুরু থেকেই তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন জাহাজ নির্মাণের নক্শা তৈরি করছে। বিদেশি ক্রেতারা নক্শা দেখে জাহাজ ক্রয়ের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং অর্ডার দিচ্ছে।
কাজের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে প্রকৌশলী, সহকারি প্রকৌশলী, সুপারভাইজারসহ অনেক পদ । তাছাড়া ভালো বেতনে বিদেশে ও এর চাহিদা বাড়ছে। আপনারা যদি এ পেশায় আসতে চান তাহলে মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট থেকে বিভিন্ন মেয়াদে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। এস.এস.সি, এইচ.এস.সি অথবা বি.এস.সি পাস করার পরও ইচ্ছে করলে এ বিষয়ক ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন।
অটোমোবাইল শিল্প: আমাদের দেশের জনসংখ্যা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। মানুষের পরিবহণের জন্য বাড়ছে গাড়ি। গাড়ির উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয় ও সার্ভিসিং এর জন্য প্রয়োজন অটোমোবাইল শিল্প, অটোমোবাইল শিল্পে কাজ করার জন্য কারিগরি জ্ঞান থাকা আবশ্যক। যারা প্রকৌশল বিভাগে পড়ালেখা করে তারাতো আছেই। এ ছাড়া গাড়ির দক্ষতা অর্জন করার বিরাট সুযোগ রয়েছে। গাড়ি ক্রয়, বিক্রয়, সার্ভিসিং ও মেরামত প্রতিষ্ঠানে যারা নিয়োগ পায় তাদের এ বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
কারণ ক্রেতাদের ভালোভাবে বোঝানোর জন্য গাড়ির মডেল, বিভিন্ন যন্ত্রাংশের নাম, স্থায়িত্বকাল, গাড়ির মান ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান থাকার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। দেশের প্রকৌশল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অটোমোবাইল বিভাগে পড়ালেখা করার বেশ সুযোগ রয়েছে। এস.এস.সি বা এইচ.এস.সি পাশ করে অটোমোবাইল শিক্ষা অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। এখন দেশের প্রতিটি শহরে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অনুশীলনমূলক কাজঃ
• বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পোশাক শিল্পের অবদানগুলো চিহ্নিত কর।

সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের পাশাপাশি নৌযান ও নৌ পরিবহণ শিল্প এবং অটোমোবাইল শিল্পও বেশ সম্ভাবনাময়। আপনারা আপনাদের আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী এগুলোর যে কোন একটি পেশা নির্বাচন করে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান দক্ষতা অর্জন করে সংশ্লিষ্ট পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন এবং আপন ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন ।
আরও পড়ুন….