মনোযোগের বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “বাউবি এসএসসি ২৩৫৮ ক্যারিয়ার শিক্ষা” এর “ক্যারিয়ার গঠনের উপাদান ও কৌশল” ইউনিট ২ এর অন্তর্ভুক্ত।
Table of Contents
মনোযোগের বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
কোন সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং তা সমাধানের জন্য মনোযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ অনেক সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনোযোগ বৃদ্ধি করার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করে। নিজেদের স্মৃতিশক্তিকে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে সে সমাধানের বিষয়গুলোকে সংগঠন করে, মনকে প্রস্তুত করে এবং অনুশীলন করে। এর জন্য মানুষকে বিশেষভাবে কোন শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না বটে, তবে বিষয়ের প্রতি মনোযোগ গঠন ও তা বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজনীয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ অত্যন্ত কার্যকরী হয়।
কাজ – এক
এটি একটি যুগল কাজ। আপনার পাশের কোন বন্ধুর সাথে বসে এ কাজটি করতে হবে। এটি সাক্ষাৎকারমূলক কাজ। আপনি আপনার বন্ধুকে প্রশ্ন করবেন পরে আপনার বন্ধুও আপনাকে প্রশ্ন করবেন। নিচে প্রশ্নের কিছু নমুনা দেয়া হল ।
১. আপনার আগ্রহ আছে এমন ৩টি বিষয়ের নাম বলুন ।
২. এই তিনটি বিষয়কে যদি একসাথে আপনার সামনে উপস্থিত করি তাহলে কোনটি আপনি বেশি পছন্দ করবেন এবং কেন?
৩. অন্য দুটি বিষয়ের প্রতি আপনার মনোভাব কেমন হবে এবং কেন?
৪. প্রথম বিষয়টিকে গ্রহণ করতে গিয়ে যদি অন্য বিষয় দুটি আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করে তাহলে আপনি কি করবেন?
৫. কোন বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেয়ার জন্য আপনি কী করেন?
৬. সাধারণত কখন আপনার মনোযোগ নষ্ট হয়?
মনোযোগের বৈশিষ্ট্য
কোন নির্দিষ্ট একটি উদ্দীপকের প্রতি ইন্দ্রিয় বা ইন্দ্রিয়সমূহকে নিবদ্ধ করাই হল মনোযোগ। মনোযোগ একটি মানসিক ক্রিয়া। এ ক্রিয়ায় ব্যক্তি তার চেতনাকে সরিয়ে নিয়ে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে কেন্দ্রীভূত করে। মনোযোগের কাজ হল বহুসংখ্যক উদ্দীপকের মধ্য থেকে একটি উদ্দীপককে বেছে নেয়া, যেটিকে পরিষ্কারভাবে ও সুস্পষ্টভাবে প্রত্যক্ষ করা যায়। গভীর মনোযোগ দেয়ার জন্য একটিমাত্র উদ্দীপকের প্রতি ইন্দ্রিয়কে কেন্দ্রীভূত করতে হয়। আমাদের চারপাশে যে অসংখ্য উদ্দীপক আছে সেগুলোর প্রত্যেকটি এক বা একাধিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
কিন্তু আমাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক উদ্দীপক কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না। যেমন, আপনি যখন পড়ায় মন দেন, তখন যদি পাশের ঘরে টেলিভিশন চলে, আপনি টেলিভিশনের প্রতি কোন প্রতিক্রিয়া করেন না। কারণ প্রতিক্রিয়া করলে পড়ার উপর মনোযোগ থাকে না। এজন্য টেলিভিশন বা পড়া, মনোযোগ দেয়ার জন্য যে কোন একটিকে বেছে নিতে হয়। আমরা কোন বিষয় বা বস্তুর সমগ্র অংশে বা একটি বিশেষ অংশে মানোযোগ দিতে পারি। আবার বস্তুর কোন বৈশিষ্ট্য যেমন, তার রং, আকার, আকৃতি বা নক্শা ইত্যাদির যে কোন একটির প্রতি মনোযোগ দিতে পারি।
তেমনই শব্দের সম্পূর্ণ অংশ বা বিশেষ একটি অংশে যেমন, তীব্রতা, স্বর বা উৎস ইত্যাদি যে কোন একটির প্রতি আমরা মনোযোগ দিতে পারি। মনোযোগের সময় ইন্দ্রিয়গুলোর সমন্বয় করা দরকার এবং আমাদের পেশীসমূহের সঠিক উপযোজন করা প্রয়োজন। যেমন, আপনি যদি ক্লাসে পিছনের সারিতে বসেন এবং শিক্ষকের কথা স্পষ্ট শুনতে চান, তবে আপনার কানটিকে বিশেষভাবে শিক্ষকের কথার প্রতি নিবিষ্ট করতে হবে। অনেক সময় যে বিষয় বা বস্তুর প্রতি আমরা মনোযোগ দিতে চাই, সেটি ছাড়াও অন্যান্য উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়ার কারণে আমাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়।
যেমন, পাশের ঘরে টেলিভিশনের শব্দ বা কোন সুন্দর দৃশ্য। এ অবস্থায় ইন্দ্রিয়ের দৃঢ় অভিযোজন খুব কার্যকরী হয়। তবে পেশীর উপযোজন অনেকক্ষেত্রে কার্যকরী হয় না। শ্রেণির ভিতরে ছাত্র অনেক সময় শিক্ষকের দিকে তাকিয়ে শ্রেণির বাইরে কোন বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হতে পারে । মনোযোগের কতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে। সেগুলো নিম্নরূপ :
১. মনোযোগের স্থান পরিবর্তন হয়
২. মনোযোগের বিচ্যুতি ঘটে
৩. মনোযোগ বিভক্ত হতে পারে
৪. মনোযোগের একটি পরিসর আছে
৫. মনোযোগের একটি কেন্দ্র ও প্রান্ত আছে।
মনোযোগের স্থান পরিবর্তন হয়: একটি সাদা কাগজের উপরে একটি ক্ষুদ্র কালো বিন্দু আঁকুন। এবার একটু দূর থেকে বিন্দুটিকে দেখার চেষ্টা করুন। দেখবেন বিন্দুটিকে একবার দেখা যাচ্ছে আর একবার দেখা যাচ্ছে না। এর কারণ হল আপনার মনোযোগ কিছুক্ষণের জন্য ঐ বিন্দু থেকে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। দেয়ালে ঝোলানো কোন ক্যালেন্ডারের ছবির দিকে তাকালেও দেখবেন ছবির একটি অংশের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে না। অর্থাৎ মনোযোগ ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে ।
মনোযোগের বিচ্যুতি ঘটে: মানুষ কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি অনেকক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। পড়ার সময় পাশের ঘরে টেলিভিশনের শব্দের প্রতি আপনার মনোযোগ সরে যায়। কিছুক্ষণ পর আপনি আবার তা ফিরিয়ে আনেন, আবার সরে যায়। এমনি করে শুধু টেলিভেশন না, অন্যান্য উদ্দীপক যেমন, কারও কথা বা হাসি ইত্যাদির প্রতিও মনোযোগ সরে যায়। এভাবে বার বার মনোযোগের বিচ্যুতি ঘটে ।
মনোযোগ বিভক্ত হতে পারে: অনেকে একইসাথে একাধিক বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হতে চেষ্টা করেন। যেমন, একজন গৃহিণী গান শুনতে শুনতে রান্না বা সেলাই করেন। প্রকৃতপক্ষে তার মনোযোগ ক্ষণিকের জন্য গানে এবং ক্ষণিকের জন্য রান্নায় নিবদ্ধ থাকে। কোন কোন ব্যক্তির মনোযোগকে এভাবে বিভক্ত করার ক্ষমতা বেশি থাকে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের বিভক্ত মনোযোগ নিয়ে কোন কাজ সুষ্ঠুভাবে করা যায় না।
মনোযোগের একটি পরিসর আছে; ব্যক্তি একসাথে কতগুলো উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ দিতে পারে তাই হল তার মনোযোগের পরিসর। মনে করেন, ব্যাংকের একজন ক্যাশিয়ার বসে টাকা গুনছেন, তার সামনে যে লোকটি দাঁড়িয়ে আছে তাকে তিনি চেনেন কিনা তা লক্ষ করছেন, পাশে অন্য একজন কর্মকর্তার কথা শুনছেন। সবগুলো কাজই যদি তিনি সুষ্ঠুভাবে করতে পারেন, তবে বুঝতে হবে তার মনোযোগের পরিসর এই তিন দিক।
মনোযোগের একটি কেন্দ্র ও প্রান্ত আছে: মনে করুন আপনি একটি বই পড়ছেন। বইয়ের ভিতরে লেখার প্রতি আপনার দৃষ্টি নিবদ্ধ। এটি স্পষ্টভাবে আপনার চেতনায় আছে। অর্থাৎ আপনার মনোযোগের কেন্দ্র হল বইয়ের লেখা। বই এবং বইয়ের একান্ত কাছে যেসব জিনিস ছড়িয়ে আছে সেগুলোও আপনার দৃষ্টির মধ্যে আছে। এগুলো অস্পষ্টভাবে আপনার চেতনায় আছে। এটি হল মনোযোগের প্রান্ত । কিন্তু বই থেকে বেশ একটু দূরে যেসব জিনিস আছে সেগুলো আপনি দেখতে পাচ্ছেন না। সেগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা সম্ভব না ।
মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
আমাদের চতুর্দিকে শত শত উদ্দীপক আমাদের অনুভূতিকে নাড়া দেয়। যেমন, চারপাশের মানুষজন, তাদের কণ্ঠস্বর, আলো, শব্দ, তাপমাত্রা, ঘরের বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র, বা কর্মস্থানের বিভিন্ন জিনিস, ফাইলপত্র, কলম, বাইরের দৃশ্যাবলি ইত্যাদি। আপনি যদি দেখেন ঘরে বা বিশেষ করে কর্মস্থানের যে কোন কাজে আপনি মনোযোগ দিতে পারছেন না, তবে বিভিন্নভাবে আপনার মনোযোগ সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করতে পারেন।
প্রথমত: যে বিষয় নিয়ে আপনি কাজ করছেন যেমন, কাগজ কলম বা কম্পিউটার, ফাইলপত্র বা ঘরের বইপুস্তক ইত্যাদি যাই হোক না কেন বিষয়টির উপর আপনাকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে। অর্থাৎ ভালোভাবে তাকাতে হবে।
দ্বিতীয়ত: কাজের নির্দিষ্ট স্থানে বিষয়টিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অর্থাৎ বিষয়টিতে কোন জটিলতা আছে কিনা তা ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে। জটিলতা থাকলে জটিল স্থানটি কোথায় বা কী তা খুঁজে বের করতে হবে। আর কাজটি যদি সহজ হয় তবে মনোযোগ আনার জন্য বিষয়টি উচ্চারণ করে পড়তে পারেন বা বিষয়টির প্রতি মৃদু শব্দ করতে পারেন ।
তৃতীয়ত: এবার কাজটি বা সমস্যাটি সমাধান করার উদ্দেশ্যে বিষয়ের প্রতি সম্পূর্ণ মনকে আবদ্ধ করতে হবে। আমরা জানি মনকে এভাবে আবদ্ধ করাই মূলত: কঠিন কাজ। কিন্তু কাজটি সমাধানের জন্য আপনাকে ইচ্ছা তৈরি করতে হবে। এই ইচ্ছাই আপনাকে মন আবদ্ধ করতে সাহায্য করবে।
চতুর্থত: কাজের নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া চারপাশে আর যেসব উপাদান বা উদ্দীপক আছে, তাদের সম্পূর্ণ অবহেলা করুন। এখানে অবহেলা বলতে বোঝানো হয়েছে উদ্দীপকগুলোর উপস্থিতি ও অবস্থান সম্পূর্ণ ভুলে যান। আপনার মনে শুধুই বিষয়ের সমস্যাজনিত স্থানটি থাকবে।
যখন দেখবেন, আপনি বিষয়ের সমস্যাটি বুঝতে পারছেন এবং কাজটি অবলীলায় করতে পারছেন তখনই বুঝতে হবে আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হয়েছে। অপ্রাসঙ্গিক সকল বিষয় ছাড়া মূল বিষয়ে আপনার মনোযোগ তৈরি হয়েছে। মনোযোগ বসানোর এই পদ্ধতিটি যদি একবার আপনার আয়ত্বে এসে যায় তবে পরবর্তীতে আপনি মনোযোগ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে পারবেন। আপনি মনোযোগ বসানোর এই প্রক্রিয়া যত বেশি বাড়াতে পারবেন অর্থাৎ বেশিক্ষণ যদি মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন, আপনার দ্বারা সম্পাদিত কাজের পরিমাণ তত বেশি বেড়ে যাবে।
সাধারণভাবে মনোযোগ বৃদ্ধি করতে না পারার কারণ হল মনোযোগ নষ্ট হওয়া বা বিছিন্ন হওয়া। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই চাইবেন আপনার মনোযোগ যেন কোন প্রকারেই নষ্ট না হয়। সেজন্য নিচের কয়েকটি বিষয়ে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। বিষয়গুলো হল:
মনোযোগের বিকর্ষক: কিছু কিছু কারণ থাকে যার জন্য মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায় যেমন, বিশেষ কোন সমস্যা বা দুশ্চিন্তা বা বিশেষ কোন কিছুর প্রতি আকর্ষণ ইত্যাদিকে মনোযোগের বিকর্ষক বলা হয়। প্রয়োজন হলে বিকর্ষককে আপনার কাজের স্থান বা পরিবেশ থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন। আর যদি দূরে সরাতে না পারেন তবে সেই বিকর্ষকের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। যেমন, কাছেই কোথাও হাতুড়ি পেটানোর শব্দ, পাশের বাড়ির শিশুর কান্না ইত্যাদি। অন্যদিকে দুশ্চিন্তা বা অমীমাংসিত সমস্যা মনোযোগ বিকর্ষণের একটি অন্যতম কারণ। এ কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের পক্ষে কোন বিষয়ে মনোযোগ দেয়া শক্ত কাজ । এক্ষেত্রে বিকর্ষণকারী সমস্যার একটি সাময়িক সমাধান আগেই করে রাখা ভালো ।
আবার অতৃপ্ত বাসনা বা ইচ্ছা মনোযোগের এক ধরনের বিকর্ষক। যেমন, কাজ নিয়ে বসলেই কোথাও যেতে ইচ্ছে করে বা গল্প করতে ইচ্ছে করে ইত্যাদি। এ ধরনের ইচ্ছাও মনোযোগের বিকর্ষক। এক্ষেত্রে মনকে আগে বোঝাতে হবে কোনটির চাহিদা এবং মূল্য আপনার কাছে বেশি। যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটির চাহিদা আগে মিটিয়ে নিতে হবে, পরে অন্য কাজটি করা সম্ভব হবে।
প্রেষণাবোধ: যে বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে তার প্রতি আন্তরিক আগ্রহ না থাকলে মনোযোগ আসতে পারে না । সাধারণত দেখা যায় ব্যক্তির প্রকৃত চাহিদার সঙ্গে মনোযোগের বিষয়ের কোন প্রত্যক্ষ সম্বন্ধ থাকে না। তখন মনোযোগ দেয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে চাকরি বা বৃত্তি অনুসরণের ক্ষেত্রে অনেক সময় ভুল বা অপ্রীতিকর বৃত্তি নির্বাচন করার জন্য মন দিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। এ জন্য চাহিদা, সামর্থ্য ও আগ্রহ অনুসারে বৃত্তি নির্বাচন করা উচিৎ। তবে নেহায়েতই বাধ্য হয়ে অপছন্দনীয় কোন বৃত্তি যদি নির্বাচন করেন এবং তা পরিবর্তন করা সম্ভব না হয় তবে সে চাকরিকে আপনার চাহিদার অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে। তখন মনোযোগ দিতে আর অসুবিধা হবে না। এক্ষেত্রেও মনকে বোঝাতে হবে এবং মানসিক স্থিতি আনতে হবে।

মনোযোগ বৃদ্ধি করার একটি ভালো উপায় হল কাজের পরিকল্পনা করা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা। পরিকল্পনা করলে নির্ধারিত কাজ করার জন্য মন পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কীভাবে কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য ব্যক্তি চিন্তা করতে থাকে এবং সচেষ্ট হয়। যার কাজে যত ভালো পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলা আছে তার পক্ষে কাজে মনোযোগ দেয়া তত সহজ।
সারসংক্ষেপ
মনোযোগ হচ্ছে এক ধরনের মানসিক বৌদ্ধিক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় অসংখ্য উদ্দীপকের মধ্য থেকে মন একটিকে বেছে নেয় এবং আমাদের চেতনা তার প্রতি কেন্দ্রীভূত হয়। সুতরাং মনোযোগ দেয়ার সময় মন থাকে সক্রিয়। এর ফলে মনোযোগের বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ হয়। মনোযোগের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল একই সাথে একের অধিক বিষয়ে মনোযোগ দেয়া সম্ভব না এবং মনোযোগ বার বার স্থান পরিবর্তন করে ও তার বিচ্যুতি ঘটে। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের একই সাথে একের অধিক বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে আমাদের ইন্দ্রিয় যেখানে কেন্দ্রীভূত হয় সেটাই মনোযোগের প্রকৃত স্থান, অন্য আর যা আছে তা চেতনায় থাকে মাত্র। অন্যদিকে মনোযোগ বিকর্ষণের জন্য পরিবেশের নানারকম উপাদান কাজ করে। মানুষ তার ইচ্ছা ক্ষমতা ব্যবহার করে মনোযোগ বৃদ্ধি করার জন্য বিকর্ষণের এসব উপাদান দূর করতে পারে। সর্বোপরি মনোযোগ বৃদ্ধি করা এবং তা কার্যকরী করার জন্য কর্ম পরিকল্পনা একটি বিশেষ উপযোগী ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন….