আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মেধাশ্রম সংরক্ষণ
মেধাশ্রম সংরক্ষণ
মেধাশ্রম সংরক্ষণ
মানুষ যে শুধু আজকেই চিন্তা করছে, তা কিন্তু নয়। সেই আদিকাল থেকেই চিন্তা করে আসছে মানুষ। প্রতিনিয়ত ভাবছে, কী করে জীবনটাকে আরো উন্নত করা যায়, করা যায় আরো আরামদায়ক ও ঝুঁকিহীন। আর এভাবে ভাবতে ভাবতে মানুষ আবিষ্কার করেছে নানা কিছু। এক দেশের মানুষ বা আবিষ্কার করল, আরেক দেশের মানুষ বা বহুকাল পরের মানুষ তা কীভাবে জানবে। এ নিয়ে প্রাচীনকালে খুবই সমস্যা হতো।
কোনো কিছু কাউকে জানাতে গেলে নিলে গিয়ে, না হর দূত পাঠিয়ে জানাতে হতো। বা ছিল অনেক সমস্যার। এছাড়াও মনে কর একটি ফুলের মানুষ কিছু আবিষ্কার করল বা কোনো বস্ত্র বানাল। এ বন্ত্র কীভাবে বানাতে হয় পত্রের বুর্গের মানুষের তা জানার কোনো উপার ছিল না। তাই কৃষ্ণ হলো লিখন পय মানুষ লিখতে শিখল। লিখন গতি ঠিক কবে কীভাবে শুরু করা হয়েছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায় না। তবে এখন পর্যন্ত সার্বিকৃষ্ণ সর্বপ্রাচীন লেখার প্রচলন ছিল ফিনিশ জাতির মধ্যে।
শুরুর দিকে লেখা ছিল ছবিভিত্তিক। বাস্তব জীবনের ঘটনা, গাছ-মাছ-নদী-পাহাড়-মানুষ ইত্যাদির ছবি এঁকে মানুষ তার মনের ভাষা বোঝাত। এসব ছবি একের পর এক সাজিয়ে দিয়ে হয়ে যেত একেকটি বাক্য । তবে এভাবে লেখা খুবই কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ ছিল। কাজেই ধীরে ধীরে মানুষ আরো সরল চিহ্নসমূহ ব্যবহার করতে লাগল। লিপি বা লিখন পদ্ধতির উদ্ভব নিয়ে মজার মজার সব উপকথা বা রূপকথা আছে।

চীনের উপকথা অনুযায়ী সাং চিয়েন নামের এক ড্রাগনমুখো লোক প্রাচীনকালে চিনা অক্ষরগুলো তৈরি করেছিলেন। মিসরের উপকথা অনুযায়ী পাখির মতো মাথা এবং মানুষের মতো দেহবিশিষ্ট দেবতা থথ মিসরীয় লিপি সৃষ্টি করেছিলেন। উপমহাদেশের উপকথা অনুযায়ী দেবতা ব্রহ্মা ভারতবর্ষের প্রাচীন লিপি আবিষ্কার করেছিলেন। ভাই তার নাম অনুসারে ঐ লিপির নামকরণ করা হয় ব্রাহ্মীলিপি । আমাদের বাংলালিপি কিন্তু এই ব্রাহ্মীলিপি থেকেই এসেছে ।
লিখন পদ্ধতির আবিষ্কার মানব সভ্যতার জন্য অনেক বড় আবিষ্কার। এ আবিষ্কার একদিকে যেমন মানুষের কঠিন মেধাশ্রমের ফল, তেমনি এর ফলে মানুষের অন্যান্য মেধাশ্রম সৃষ্ট বিজ্ঞানের আবিষ্কার, প্রাচীন জীবনযাপনের কথা, সভ্যতার কথা, ইতিহাস, বিভিন্ন দেশ ও জাতির কথা, প্রাকৃতিক সম্পদের কথা সংরক্ষণ করা গেছে।
প্রাচীনকালে সবাই লিখতে পারত না। যারা লিখতে পারত তাদেরকে বলা হতো ‘লিপিকর’ । এখনো আমাদের দেশে অনেক লিপিকর আছেন যারা বিভিন্ন দলিলাদি লেখেন।
আরও দেখুন :