সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত নৈতিকতা আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “বাউবি এসএসসি ২৩৫৮ ক্যারিয়ার শিক্ষা” এর “ক্যারিয়ার গঠনে সংযোগ স্থাপন ও আচরণ” ইউনিট ৩ এর অন্তর্ভুক্ত।
Table of Contents
সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত নৈতিকতা
মানুষ শান্তিপ্রিয়। কোন রকম ঝামেলা ছাড়া দিন কাটানো মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। তাই সৎ পথে নিয়মনীতি মেনে চলতে পারলে সে খুশি হয়। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে নানা রকম বাধাবিঘ্ন, বিভিন্ন রকম সমস্যা মানুষকে সহজ ও সরল পথে চলতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণে মানুষ জীবনের পথকে মসৃন করে তুলতে নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে। অভিজ্ঞতা তাকে জানিয়ে দেয় যে অন্যায় বা অসৎ পথ মানুষের জীবনকে দূর্বিষহ করে তোলে, লোভ ও হিংসা মানুষকে দিকবিদিক তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়, তার জীবনকে অস্থির করে তোলে। একটি মিথ্যে কথা বললে তার পিছনে বহু মিথ্যে কথা বলার প্রয়োজন এসে জড় হয়।
এসব কারণে সুন্দর ও স্বচ্ছ পরিবেশে মানুষ সত্য কথা বলে, সহজ পথে চলে এবং সৎ ও ন্যায়ের পথে নিজের কাজটি করে। এ জন্যে প্রয়োজন পরিবেশ ও পরিস্থিতি সহজ ও স্বাভাবিক রাখা এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেন মানুষ সেখানে পরম নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করতে পারে, এমন আইন তৈরি করতে হবে যেন তা সকল মানুষের মর্যাদা সমানভাবে রক্ষা করতে পারে। তবেই মানুষ আইনকে শ্রদ্ধা করবে, সৎ পথে নিয়ম মেনে মনোযোগ দিয়ে নিজের কাজটি করবে এবং মানুষ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পূর্ণ জীবন লাভ করবে।
কাজ – এক
নিচের এ কাজটি বিভিন্ন ধরনের প্রতিকুল পরিবেশে আপনাকে মাথা ঠাণ্ডা রেখে সততার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার পথনির্দেশ দেবে। আপনি নৈতিকতা সম্পন্ন একজন মানুষ হয়ে নিজেকে যাচাই করার সুযোগ লাভ করবেন।
সমস্যা ১ : ধরুন, ক্লাসে দুষ্টুমি করেছে বলে আপনার সন্তানকে স্কুলের একজন শিক্ষক নির্দয়ভাবে মেরেছেন। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর শিক্ষকরা তাকে বাড়ি পৌঁছে দেন। এ অবস্থায় আপনি কী করবেন?
সমস্যা ২ : ধরা যাক, আপনার একজন আত্মীয় আপনার সই নকল করে ফিক্সড ডিপোজিট থেকে আপনার জমানো একটি বড় অংকের টাকা তুলে নিয়েছে। সে সম্পূর্ণ ব্যাপারটি অস্বীকার করছে। এ অবস্থায় আপনার কর্তব্য কি?
সমস্যা ৩ ঃ মনে করুন আপনার একজন প্রতিবেশী তার বাড়ির চতুর্দিকে দেয়াল দেয়ার জন্য আপনাকে না জানিয়েই আপনার জমির উপর একটি ফলবান আমগাছের অনেকগুলো ডাল কেটে গাছটির বিশেষ ক্ষতি করেছে। উল্লেখ্য যে, ডালগুলো প্রতিবেশীর জমির উপর পড়েছিল। এমন একটি অবস্থায় আপনার কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
সমস্যা ৪ : আপনার বাড়িতে নানাবিধ ঝামেলা, পথের দূরত্ব, সময় মত রিক্সা বা গাড়ি না পাওয়া ও ট্রাফিক জ্যাম ইত্যাদি কারণে ইদানিং আপনার অফিসে যেতে ৩০ মিনিট থেকে ৪৫মিনিট দেরী হয়ে যাচ্ছে। আপনার কর্মস্থানের বড়কর্তা এজন্য একদিন আপনাকে ডেকে কৈফিয়ত তলব করলেন। আপনি তাকে কী বলবেন এবং কী করবেন?
সততা
চাকরি ক্ষেত্রে সততা কী? অফিসে বা ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সব সময় সত্যি কথা বলা, কোন অন্যায় কাজ না করা এবং সত্য ও ন্যায়ের পথকে অনুসরণ করাকে চাকরি ক্ষেত্রে সততা বলে ।
চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সততা
চাকরির জন্যে যখন সাক্ষাৎকার দেবেন বা পরীক্ষায় বসবেন তখন সবার আগে সততার কথাটি মনে রাখবেন। চাকরি দেয়ার আগে প্রার্থীর পূর্ব ইতিহাস ও বর্তমান যোগাযোগ অবস্থা যাচাই করে নেয়া হয়। এ সময়ই তার সততা ও নৈতিক অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রার্থীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য তার ব্যক্তিত্বের পরীক্ষা এবং সামাজিক সম্পর্ক কতটা গভীর সে সম্বন্ধেও পরীক্ষা নেয়া হয়। সতর্ক থাকবেন! সাক্ষাৎকার বোর্ডে, পরীক্ষায় বা আপনার বায়োডাটায় কোন ভুল বা মিথ্যা তথ্য দেবেন না!
দিলে অথবা আপনার যে ছবি দিয়েছেন তা অস্পষ্ট বা সন্দেহজনক হলে আপনার আজকের চাকরির দরখাস্ত তো বটেই, আগামী দিনের জন্যেও যে কোন জায়গায় চাকরির দরখাস্ত করা বাতিল হয়ে যাবে। সরকারী ও বেসরকারী সব জায়গায় আপনি একজন মিথ্যেবাদী ও প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাবেন ।
আন্তঃব্যক্তিক সদাচরণ
চাকরি ক্ষেত্রে শুধু জ্ঞান ও দক্ষতা থাকলেই সফলতা লাভ করা যায় না। এর জন্য আপনি আপনার বড়কর্তার সাথে এবং সহকর্মীদের সাথে কেমন সম্পর্ক রেখেছেন, অর্থাৎ তারা আপনার সম্পর্কে কী বলেন তার উপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। চাকরিক্ষেত্রে বড়কর্তা বা সহকর্মীদের কাছে আপনার কোন সহকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ করে নিজের দাম বাড়াবেন না।
এতে শুধু মিথ্যাবাদী হিসেবেই নয় নিন্দুক হিসেবেও আপনার দুর্নাম প্রতিষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত কোন কাজ সম্পন্ন করার প্রতিজ্ঞা করলে বা কোন সহকর্মীকে তার কাজে সাহায্য করার জন্য প্রতিজ্ঞা করলে তা রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। অন্যথায় প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারী হিসেবে আপনার দুর্নাম ছড়িয়ে পড়বে।
তুচ্ছ বা ছোটখাট চুরি
অফিস থেকে কাগজ-কলম বা এ জাতীয় কোন জিনিস বাড়ি নিয়ে যাবেন না। কারণ যেহেতু এগুলো আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, এটি চুরি হিসেবে ধরা হবে। যারা নিয়মিত দেরী করে আসেন বা অফিসে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন, তাদেরও এক ধরনের চোর হিসেবে অনেকে গণ্য করে থাকেন। একে বলা হয় সময় চুরি। কারণ অফিসে আপনার কাজের প্রতি মুহূর্তের জন্য আপনাকে বেতন দেয়া হয়। এরজন্য ধীরে ধীরে লোকে আপনাকে ঘৃণা করতে শুরু করে। ঘুষ দেয়া ও নেয়া, বাজে জিনিস দিয়ে খদ্দেরকে ঠকানো, অফিসের সম্পদ চুরি করে বিক্রী করে দেয়া ইত্যাদি অপরাধ আপনার বিরুদ্ধে আদালতে নালিশ করার উপযোগী।
আপনার বিরুদ্ধে দুষ্কৃতিকারীর চার্জ আনা হতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সাধারণত নিজেদের প্রতিষ্ঠানের দুর্নাম হওয়ার ভয়ে আদালত পর্যন্ত না যেয়ে দোষী ব্যক্তিকে তার চাকরি থেকে অব্যহতি দেয়ার ব্যবস্থা নেন ।
নৈতিকতার বিরোধিতা করা
যে কোন প্রতিষ্ঠানে কার্য পরিচালনার জন্য শক্তিশালী নৈতিক নিয়ম-শৃঙ্খলা বলবৎ থাকে। অনেক কর্মকর্তা বা কর্মচারী অনেক সময় দাপ্তরিক কাজের কোন গোপন তথ্য টাকার বিনিময়ে বা অন্য কোনভাবে বাইরে প্রকাশ করে দেয়। এটি একটি ভয়ংকর অপরাধ। এইসব গোপন তথ্য বা ‘কপি রাইট’ বাইরে বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রকাশ না করে দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান সাধারণত বন্ড সই করিয়ে নেয়। এরপরও যারা এসব তথ্য প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ থেকে অব্যহতি দেয়ার ব্যবস্থা করেন। অন্যদিকে এ ধরনের ব্যক্তি অন্য কোথাও চাকরি পান না, কারণ তার সম্পর্কে গোপন তথ্য প্রকাশজনিত খবরটি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
নিষ্ঠা কী?
নিষ্ঠা এমন একটি গুণ যা চাকরিক্ষেত্রে আপনার সুনাম বৃদ্ধি করবে এবং কাজ করে আপনি আত্মতৃপ্তি লাভ করবেন। কর্তৃপক্ষ সব সময়ই কর্মচারী বা কর্মকর্তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা আশা করে। নিষ্ঠা হল কাজের প্রতি ব্যক্তির অখণ্ড মনোযোগ ও দায়িত্বের প্রতি একনিষ্ঠ কর্তব্যপরায়ণতা। নিষ্ঠা আপনার মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত করবে ও নিজের প্রতি আপনাকে মর্যাদাশীল করে তুলবে। মানুষ যখন তার কোন কাজের ফলাফল নিয়ে অনেক বড় আশা করে তখন কাজের প্রতি সে নিষ্ঠাবান হয়। অর্থাৎ কাজে মনোযোগী হয়, কঠিন পরিশ্রম করে এবং সমগ্র কাজটি যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করে ।
কাজের প্রতি নিষ্ঠা প্ৰদৰ্শন
আগের দিনে মানুষ তার কাজের প্রতি এত নিষ্ঠাবান থাকত যে এক চাকরিতে সে দীর্ঘ ২৫ বছর কাটিয়ে দিত। নিজেকে তারা কাজের গোলাম বলে মনে করত। আধুনিক কালে মানুষ ২/৩ বছরও এক চাকরি নিয়ে কাটায় না। কোন একটি চাকরির কাজের প্রতি মনোনিবেশ করে না। এক চাকরি থেকে অন্য চাকরিতে ছুটে বেড়ায় কিন্তু কোথাও শান্তি পায় না । মানুষ যখন তার চাকরিতে কাজের বিষয় সম্পর্কে অধিক জানতে চায় তখন সেই কাজে তার নিষ্ঠা প্রকাশ পায়।
কোন একটি কাজে তিনি স্থির থাকেন, দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে তিনি কাজের গভীরে প্রবেশ করেন, কাজের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তিনি জ্ঞানলাভ করেন, তখন তিনি কাজ করে আনন্দ পান এবং আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। ফলে তার নিজের যেমন উন্নতি হয়, প্রতিষ্ঠানেরও উন্নতি হয়। কাজের ক্ষেত্রে কোন জটিল সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে মানুষ তার নিষ্ঠা প্রয়োগ করে। একজন নিষ্ঠাবান পেশাধারী যদি কোন কর্তৃত্ব তার নাও থাকে সমস্যা দেখলেই তিনি এগিয়ে আসেন এবং সমাধানের জন্য চেষ্টা করেন। অন্যদিকে কাজের প্রতি যার কোন আগ্রহ নেই, প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে আসলেও তার ভিতরে কোন বোধ কাজ করে না।
তিনি নিস্পৃহ থাকেন। যেমন, বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক যদি দেখেন শ্রেণিকক্ষগুলো ঠিকমত ঝাড়ু দেয়া হয় না, নোংরা, ময়লা সারা ক্লাসে ছড়িয়ে থাকে এবং এতে শিক্ষার্থীদের পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। নিষ্ঠাবান শিক্ষক তখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য উদ্যোগ নেন। কিছু না পারলেও নিজে এবং শিক্ষার্থীদের সাহায্য নিয়ে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করেন। অনেক নিষ্ঠাবান ব্যক্তি অনেক ক্ষেত্রে হাতের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার কাজ ছেড়ে তিনি নড়েন না। এমন কি রাত হয়ে গেলেও দেখা যায় তিনি কাজ করেই চলেছেন। এ ধরনের মানুষের কাছে সময় অনেক মূল্যবান। প্রত্যেক পেশাধারীর জন্য সময় নির্দিষ্ট।
নিষ্ঠাবান ব্যক্তি কাজের মধ্য দিয়ে এমন কি নিজস্ব সময়ও ব্যয় করার জন্য তিনি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকেন। কারণ তার কাছে কাজটি শেষ করা অনেক বেশি জরুরী। এরকম নিষ্ঠাবান ব্যক্তি সাধারণত সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবার পরে অফিস থেকে বের হন। নিষ্ঠাবান ব্যক্তিরা কখনও কাজের চাপ নিয়ে অভিযোগ করেন না বা কাজের সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েন না। অনেকে আছেন সমস্যা দেখলেই পিছিয়ে যান। কিন্তু নিষ্ঠাবান ব্যক্তি আনন্দ নিয়ে কাজ করেন। সমস্যায় পড়লে তারা বলেন ‘আরে সমস্যা তো থাকবেই, ঘাবড়ালে চলবে কেন? আসুন না দেখা যাক কী করা যায়।’
কাজে নিষ্ঠাবান হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে নানা ধরনের গুণাগুণ প্রয়োগ করতে হয়, যেমন, শৃঙ্খলা, মনোযোগ, সততা, ধৈর্য্য, কঠোর পরিশ্রম ইত্যাদি আরও অনেক কিছু। এসব গুণ প্রয়োগ করে ব্যক্তি কাজটিকে সুষ্ঠু উপায়ে সম্পন্ন করেন। এ কারণে তিনি নিজে আনন্দে থাকেন, সব বিষয়ে তার ইতিবাচক মনোভাব থাকে এবং সময়ের সদ্ব্যবহার করেন বলে যথেষ্ট অবসর সময় ভোগ করতে পারেন।
পেশাগত নৈতিকতা
পেশাক্ষেত্রে নৈতিকতা পেশাধারী ব্যক্তির চারিত্রিক গুণাবলি ও মূল্যবোধের অর্থ প্রকাশ করে। আমরা ইউনিট ছয় থেকে এ পর্যন্ত ব্যক্তির যে সব গুণাগুণ নিয়ে আলোচনা করেছি, তার সবকিছুই নৈতিকতার অন্তর্ভুক্ত। যেমন, সততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, গোপনীয়তা রক্ষা করা, নিরপেক্ষতা, আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও বাধ্যতা, যথাযথ সম্মান দেখানো, বিশ্বস্ততা, নিষ্ঠা ইত্যাদি। একজন পেশাধারী ব্যক্তির জন্য পেশাগত কাজের সাথে সাথে এসব গুণ ধারণ করা ও প্রতিক্ষেত্রে তার প্রয়োগ করা তার পেশাদারিত্বেরই অংশ বলে মনে করা হয়।
কর্মক্ষেত্র বা কর্মপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নতির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ পেশাগত নৈতিকতা অনুসরণ করে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে দেখা যায়, প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই তার নিজস্ব নিয়ম-শৃঙ্খলা সমন্বিত বিধি বা আইনের ধারা প্রচলন করেন। যা অন্তর্ভুক্ত ও সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি মেনে চলতে বাধ্য হন। এসব বিধি বা আইন ব্যক্তির নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সমন্বিত হয়ে থাকে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের কাজ একদিকে যেমন নির্দিষ্ট নিয়মে সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে চলে। অন্যদিকে সকল পেশাধারী ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট গতিতে তাদের পেশাজীবন নির্বাহ করতে সক্ষম হন।
এখানে সকলের প্রতি সমান দৃষ্টি দেয়া হয় বলে সকলে সন্তুষ্ট থাকেন। মানুষ নিয়মের অনুগত। তাই সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে চলতে সে ভালবাসে। পেশাগত নৈতিকতাকে যদি প্রতিদিনের নিয়মের অন্তর্ভুক্ত করে তোলা যায় তবে সে স্বত:স্ফুর্তভাবে তা মেনে চলতে নিজের থেকে তাগিদ অনুভব করবে। সারা জীবন ধরে পেশাগত নিয়ম ও নৈতিকতা অনুসরণ করে মানুষ নিজের চরিত্রের দৃঢ়তা প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। ফলে সে একাধারে প্রতিষ্ঠানের ও সমাজের জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে ওঠে।
কাজ – দুই
আপনার প্রতিদিনের কাজের কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি সততা রক্ষা করতে পারেন এবং নিষ্ঠাবান হতে পারেন তা পৃথকভাবে চিহ্নিত করুন। এজন্য প্রথমে কমপক্ষে দশটি কাজের কথা লিখুন। এবার প্রতিটি কাজের জন্য কীভাবে সততা রক্ষা করা যায় এবং কাজটি সম্পন্ন করতে কীভাবে আপনার নিষ্ঠা প্রয়োগ করা যায় তা কাজের পাশে লিখুন।

সারসংক্ষেপ
সততা ও নিষ্ঠা এ দুটিই মানুষের নৈতিক চরিত্রের অন্তর্ভুক্ত গুণাবলি। একজন পেশাজীবী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি যদি সামাজিক স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন আশা করেন তবে তাকে উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। তার চারিত্রিক দৃঢ়তা তাকে মানুষের কাছে মর্যাদাশীল হিসেবে পরিচিত করবে। অন্যদিকে তাকে নিয়ে প্রতিষ্ঠান গর্ব করবে কারণ তার নিষ্ঠায় ও সততায় প্রতিষ্ঠানের লাভজনক আয় হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠান উপকৃত হয়েছে। এভাবে দেখা যায় উন্নত নৈতিক চরিত্র মানুষকে
- কর্মক্ষম করে তোলে
- মর্যাদা দেয়
- স্বীকৃতি দেয়
- অর্থ ও বিত্ত দেয়
- সুখ ও শান্তি দেয়।
আরও পড়ুন….