শুনতে কি পাও? কথা বলতেই যেন আমাদের আগ্রহটা বেশি, অন্যের কথা শোনার অভ্যাস আমাদের নেই বললেই চলে। কেউ কিছু বলতে এলে আমরা তার কথার প্রথম লাইনটা শুনেই বাঁকিটা শোনার আগ্রহ হারাই- হয়ে যাই বিরক্ত। তার পর, কথা শেষ হওয়ার আগেই ‘বিজ্ঞের মত’ নিজের জ্ঞান বিতরণের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এতে যেটা হয়, প্রায়শ মূল সমস্যাটা ভাল করে বোঝা হয়ে ওঠে না- সমাধানের রাস্তাটাও অধরা থেকে যায়।
[ শুনতে কি পাও | ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট ]
ভালো বক্তা হওয়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, ভালো শ্রোতা হওয়া। অন্যের কথা মন দিয়ে শোনাটা একটা অভ্যাস। যেটা, প্রতিদিনই প্রায় নিয়ম করেই চর্চা করতে হয়। তা সে যেই হোকনা কেন। অনেক সময় নিজে কোনও সমস্যার সমাধান করতে না পারলে, অন্যের পরামর্শ নিলে দেখবেন হঠাৎ কোনও সমাধানের রাস্তা বেরিয়ে এসেছে। আসলে কোনও সমস্যা সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত নেওয়ার সুবিধা হল, এটি সমস্যাকে বিভিন্ন দিক থেকে দেখতে সাহায্য করে। সে কারণে অন্য যা বলতে চান, তা মন দিয়ে শুনুন। না বুঝতে পারলে ভাল করে প্রশ্ন করে বিষয়টি বুঝে নিন। জেনে নিন, তিনি ঠিক কী চাইছেন আপনার কাছে। তা হলে দেখবেন অনেক সমস্যা মেটানো আপনার কাছে পানির মত সোজা হয়ে গিয়েছে।
নিজের কাজ সম্পর্কে অন্য কেউ মতামত দিতে এলে আমরা যেটা করে থাকি, প্রথম দু’-চার লাইন শোনার পরই নিজেই যুক্তি দিয়ে বোঝাতে থাকি কেন, কাজটি ওরকমভাবে করা হয়েছে। শুরু করি ত্রুটিগুলোর পক্ষে সাফাই গায়তে। এটা ভুল পদ্ধতি। বরং তিনি যা বলছেন, তা মন দিয়ে শুনুন। একটা সময় আপনার মনে হতে পারে উনি ঠিক বলছেন না, তবু শুনতে থাকুন। শুধু মুখের কথা শোনা নয়, লক্ষ করুন তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, মুখের ভঙ্গিমা।
অনেক সময় এগুলি দিয়েও আসলে তিনি কী বলতে চাইছেন তা অনেক স্বচ্ছ হয়ে যাবে। কারও কথা মন দিয়ে শোনা মানে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়াও বোঝায়। তাই কেউ যখন কিছু বলছেন, তখন মাঝে মাঝে প্রশ্ন করলে, বিষয়টি প্রশ্ন করে নিতে চাইলে, এই ব্যক্তিটিও বুঝবেন তাঁর কথার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। উল্টো দিকের মানুষটিও আরও সুনির্দিষ্ট করে বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে চাইবেন।
নিয়মিত যদি আপনি অন্যের কথা শোনার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন, তবে দেখবেন সবার কাছে আপনার গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। শুধু কর্মক্ষেত্র নয়, অন্যের কথা মন দিয়ে শোনার অভ্যাস যে কোনও সম্পর্ককে আরও গভীর করে। দূত সমাধানে সহায়তা অনেক সমস্যার। তাই শুধু গলা সারা নয়, চর্চা করতে হবে শুনারও। এছাড়া ভালো বক্তা হওয়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, ভালো শ্রোতা হওয়া।
লেখক,
শামস বিশ্বাস
শামস্ বিশ্বাস’-এর পুরো নাম শামীম ফরহাদ শামস্। রাজশাহী কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, রাজশাহী ল কলেজ থেকে এল.এল.বি (পাস) এবং ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) থেকে মার্কেটিংয়ে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতকোত্তর। আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, আমার দেশ, ইত্তেফাক, যুগান্তর, সমকাল এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিয়মিত প্রদায়ক ছিলেন। এখন নিয়মিত লিখছেন দৈনিক আমাদের সময়ে। মেটা (ফেসবুক) সার্টিফাইড ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েট শামস্-এর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু ২০১১ সাল থেকে। চাকুরী করেছেন টেকনোবিডি ওয়েব সল্যুশন (প্রা.) লি., ঈগল মিউজিক, গুরুকুল এবং বিজয় টিভি তে। বর্তমানে কর্মরত আছেন এ সি আই মটরস্-এ। ব্যক্তিজীবনে শামস্ এক সন্তানের জনক।
আরও পড়ুন: